কবি নজরুল সরকারি কলেজে বিজয় দিবস ২০২৪ উদযাপন
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৩তম বার্ষিকী অত্যন্ত গুরুত্ব এবং মর্যাদার সাথে উদযাপন করেছে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান **কবি নজরুল সরকারি কলেজ**। এ দিনটি জাতির জীবনে মুক্তির আলো জ্বালানোর দিন। পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ছিল বিজয়ের চেতনায় উদ্বেলিত এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
### কর্মসূচির সূচনা
সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। কলেজ প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ মহোদয়। পতাকা উত্তোলনের পর জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে কলেজ চত্বরে স্থাপিত শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
### আলোচনা সভা
পরে কলেজ মিলনায়তনে একটি বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার মূল বিষয়বস্তু ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস এবং বর্তমান প্রজন্মের জন্য এর গুরুত্ব। বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগের গল্প তুলে ধরে নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান।
### সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
আলোচনা সভার পর এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিক্ষার্থীরা গান, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি এবং নাটকের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের গল্প ফুটিয়ে তোলে। বিশেষ আকর্ষণ ছিল মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একটি নাট্য পরিবেশনা, যা উপস্থিত সকলের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
### সমাপ্তি
পুরোদিনের অনুষ্ঠানমালা শেষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে জাতি গঠনের শপথ নেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা প্রতিজ্ঞা করে, বিজয়ের চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে তারা বাংলাদেশকে আরও উন্নত এবং সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করবে।
**কবি নজরুল সরকারি কলেজ** সবসময়ই জাতীয় দিবসগুলোতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উদযাপন করে। বিজয় দিবস উদযাপনের এ আয়োজন তরুণ প্রজন্মকে দেশপ্রেম এবং ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
**১৪ ডিসেম্বর: শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে কবি নজরুল সরকারি কলেজের আলোচনা সভা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি*
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে **কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ঢাকা** যথাযথ মর্যাদায় একটি আলোচনা সভা ও শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে। সকাল **১০:০০টায়** কলেজের **শিক্ষক পরিষদ মিলনায়তনে** আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিদের সক্রিয় অংশগ্রহণে স্মরণীয় হয়ে ওঠে।
—
### **অনুষ্ঠানের সূচনা**
অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে। জাতির সূর্যসন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের এই আয়োজনে কলেজ চত্বরে ছিল এক আবেগঘন পরিবেশ।
—
### **প্রধান অতিথির বক্তব্য**
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ **অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান**। তিনি তার বক্তব্যে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং বলেন,
*”১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত মুহূর্তে বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, কারণ তারা জানত, এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা এই মানুষগুলোর চিন্তা-চেতনার মধ্যেই নিহিত। আমাদের দায়িত্ব হলো তাদের আদর্শকে লালন করা এবং নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পর্কে সচেতন করা।”*
—
### **বিশেষ অতিথির আলোচনা**
বিশেষ অতিথি **অধ্যাপক মুহাম্মদ হায়দার মিঞ্জ** শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন,
*”বুদ্ধিজীবীরা শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, স্বাধীনতার পরও দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”*
—
**মূল আলোচক এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ**
নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতনতা বিষয়ক র্যালি: কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ঢাকা
আজকের পৃথিবীতে, নারী ও কন্যাদের প্রতি সহিংসতা একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে বিশ্বের প্রতিটি সমাজে বিদ্যমান। বিভিন্ন ধরণের সহিংসতা, যেমন শারীরিক, মানসিক, যৌন, এবং অর্থনৈতিক সহিংসতা, নারী ও কন্যাদের জীবনে প্রতিনিয়ত নানা চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। তবে, এর বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি এবং সামাজিক আন্দোলন এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আর এমন একটি লক্ষ্য নিয়ে সম্প্রতি কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ঢাকা আয়োজন করেছিল এক বিশেষ র্যালি, যার উদ্দেশ্য ছিল নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।
র্যালির উদ্বোধন এবং উদ্দেশ্য
র্যালিটি কলেজ ক্যাম্পাসের সেন্ট্রাল হলে শুরু হয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা, শিক্ষকরা এবং কলেজের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। র্যালির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সমাজের প্রতিটি স্তরে নারী ও কন্যাদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি করা, যাতে সকল শ্রেণির মানুষ এই সমস্যার গুরুত্ব বুঝতে পারে এবং সহিংসতা বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারে।
র্যালির উদ্বোধনী ভাষণে কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, প্রফেসর মুহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, “নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা শুধু একটি আইনগত বা নৈতিক সমস্যা নয়, এটি একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন। সমাজের প্রত্যেকটি ব্যক্তির দায়িত্ব, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের, এই সমস্যাকে সচেতনতার মাধ্যমে দূর করা।”
র্যালির আয়োজন এবং পথ চলা
র্যালিটি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে ফের কলেজে ফিরে আসে। র্যালিতে শিক্ষার্থীরা হাতে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার, এবং ব্যানার নিয়ে স্লোগান দেয়—“নারীকে সম্মান দিন, সহিংসতা বন্ধ করুন”, “কন্যার প্রতি সহিংসতা নয়, ভালোবাসা ও সুরক্ষা চাই”, “সবাই মিলে নারীকে রক্ষা করো”। এছাড়া র্যালিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অংকিত পোস্টারের মাধ্যমে এই বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরে এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করে।
সচেতনতার গুরুত্ব
এ ধরনের সচেতনতা র্যালি শুধুমাত্র একটি সামাজিক আন্দোলন নয়, বরং এটি একটি শিক্ষামূলক কার্যক্রমও। বর্তমান সময়ে সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে কিশোর ও তরুণদের মধ্যে সহিংসতার চিত্র প্রচারিত হওয়া স্বত্ত্বেও, এর বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীর প্রতি সহিংসতা সমাজে এক ধরনের অন্ধকার চিত্র তৈরি করে এবং সমাজের স্থিতিশীলতা এবং শান্তি ব্যাহত করে।
কবি নজরুল সরকারি কলেজের ছাত্রীরা বিশেষভাবে এই র্যালিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করেছে এবং দেখিয়েছে যে তারা এই সামাজিক সমস্যা দূর করতে সম্মুখীন। এতে কেবল একটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়নি, বরং পুরো সমাজে এই ব্যাপারে নতুন এক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
উপসংহার
নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি করা শুধু রাষ্ট্রীয় বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাজ নয়, এটি সমাজের প্রতিটি ব্যক্তির দায়িত্ব। কবি নজরুল সরকারি কলেজের এই উদ্যোগ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং তাদের আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনা সম্ভব। এই র্যালির মাধ্যমে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে তা শুধু আজকের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতেও আমাদের সবার দায়িত্ব হয়ে থাকবে—নারী এবং কন্যাদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে হবে, এবং তাদের জন্য একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক সমাজ তৈরি করতে হবে।
#নারী_সহিংসতা_প্রতিরোধ
#কবি_নজরুল_সরকারি_কলেজ
#সচেতনতা_সৃষ্টি_করুন
#সমাজ_পরিবর্তন_আনা